হরি ঘোষ, রনীগঞ্জ : রানীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পিতলের রথ দীর্ঘ দু বছর নমঃ নমঃ করে পার হলেও এবছর সমহিমায় রথযাত্রা উৎসব শুরু হল। পিতলের রথ এবার ৯৮ বছরে পড়ল। প্রাচীনকালের জমিদার বাড়ির এই রথ প্রসঙ্গে জানা যায় যে ১৯২৫ সালের আগে পর্যন্ত পুরীর জগন্নাথদেবের রথের আদলে কাঠের রথ নতুন রাজবাড়ি থেকে পুরনো রাজবাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হতো। পরে সেই রথ উৎসব শেষে রাজ পরিবারের হল ঘরে রাখা হতো রথকে। সেই রথেই কোনো কারনে আগুন লাগায় পুড়ে ছাই হয়ে যায় কাঠের রথ। তারপর সিয়ারশোল রাজ পরিবারে সদস্য প্রমথ নাথ মালিয়া কলকাতার চিৎপুরের প্রসাদ চন্দ্র দাসকে দিয়ে পিতলের রথ তৈরি করান। রথের চারপাশে রামায়ণ-মহাভারতের বিভিন্ন দেবদেবীর তথ্য তথা কৃষ্ণ লীলার নানান কাহিনী মূর্তির আদলে তুলে ধরে তা রথের স্থাপন করা হয়।
তবে এই রথে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার সাথেই চূড়ায় অধিষ্ঠিত হন কুল দেবতা দামোদর চন্দ্র জিউ। আগে এই রথ পুরনো রাজবাড়ি থেকে নতুন রাজবাড়িতে নিয়ে আসা হলেও বিগত কয়েক বছর ধরে রথটি নতুন রাজবাড়ি থেকে পুরনো রাজবাড়িতে নিয়ে আসার চল শুরু হয়। মূলত মূল্যবান মূর্তি চুরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নজরে রেখে ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বছর ভর রাজবাড়ির সামনেই কড়া নজরদারির মধ্যে রাখা হয় রথকে। পুরীর জগন্নাথদেবের রথযাত্রার সময়কালেই এই রথযাত্রার আয়োজন করা হয়, যাকে ঘিরে বসে বিশাল মেলা। সুপ্রাচীন এই রথযাত্রায় স্থানীয়দের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আধুনিক সব দোকানের সাথেই কৃষি সহায়ক নানান সামগ্রীয় বিক্রির দোকানও দেখা যায়। জানা গিয়েছে, এই মেলা আট দিন ধরে চলবে।