নিজস্ব সংবাদদাতাঃ আষাঢ় মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব। উড়িষ্যা রাজ্যের পুরীতে প্রভু জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার দিন ১ জুলাই। সমগ্র দেশ থেকে ভক্তের দল পুরীর মন্দিরে সমবেত হবেন এই পবিত্র উৎসব চাক্ষুষ করতে। দেবী সুভদ্রা, প্রভু বলভদ্র এবং এবং জগন্নাথ দেব আরোহণ করেন রথে। এরপর ভক্তগণ সেই রথের রশি ধরে টানে ও শুরু হয় রথযাত্রা উৎসব। জগন্নাথ মন্দির থেকে তিন কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছ গুন্ডিচা মন্দির। এই মন্দিরকে জগন্নাথদেবের মাসির বাড়ি বলা হয়। রথযাত্রার সময় সেখানেই এসে থামে জগন্নাথদেব, বলভদ্র এবং সুভদ্রাদেবীর রথ। সেখানেই পরবর্তী আটদিন কাটান তাঁরা। গুন্ডিচামন্দিরে রথ যাত্রা করে বলে এই যাত্রাকে গুন্ডিচাযাত্রাও বলা হয়। রথযাত্রার সময় গুন্ডিচা মন্দিরেও প্রচুর ভিড় হয়। মনে করা হয়, গুন্ডিচাযাত্রার সময় প্রভু জগন্নাথদেবের দর্শন পেলে আর কোনও পাপ থাকে না। স্থান হয় জগন্নাথদেবের চরণে।
মনে করা হয়, জগন্নাথদেবের রথের প্রতিটি অংশ অত্যন্ত পবিত্র। তিনটি রথে তেত্রিশ কোটি দেবদেবী অধিষ্ঠান করছেন। ফলে রথের রশি স্পর্শ করলেই তেত্রিশকোটি দেবদেবীর চরণ স্পর্শ করা হয়। এছাড়া প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে রথের রশি স্পর্শ করলে পুনর্জন্ম হয় না। এছাড়া মনে করা হয়, সকল পাপ থেকেও মুক্ত হওয়া যায়। জগন্নাথদেবের রথ টানতে পারলে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফললাভ হয়। নববিবাহিতরা রথের রশি ছুঁয়ে তাই প্রভুর আশীর্বাদ নেন। এছাড়া ভক্তদের মতে এই রথের রশির মাথায় ঠেকালে আর দুঃস্বপ্ন আসে না। রোগ থেকেও মুক্তি লাভ হয়।
রথযাত্রার সময়সূচী
• রথযাত্রা শুরু হবে ১ জুলাই শুক্রবার।
• হেরা পঞ্চমীর দিনটি চিহ্নিত করা হয়েছে (যে প্রথম পাঁচদিন সময়কালে প্রভু জগন্নাথ মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দিরে বাস করবেন।) জুলাই মাসের ৫ তারিখ, মঙ্গলবার।
• সন্ধ্যাদর্শন হবে জুলাই মাসের ৮ তারিখ, শুক্রবার।
• বহুড়া যাত্রা (এই দিনে প্রভু জগন্নাথ তার ভাই বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রার সঙ্গে নিজ গৃহে ফিরে আসেন) হবে ৯ জুলাই, শনিবার।
• সুনা বেশ বা রাজরাজেশ্বর বেশ এর দিন ১০ জুলাই, রবিবার।
• আধার পানা প্রথা (রথের উদ্দেশ্যে নিবেদিত দুধ, চিনি, পনির, শুকনো ফল দিয়ে তৈরি বিশেষ পানীয়) হবে ১১ জুলাই, সোমবার।
• নীলাদ্রি বিজে-এর জন্য স্থির হয়েছে ১২ জুলাই, মঙ্গলবার।