জঙ্গলের গভীরে নজরদারিতে মোটরবাইক বনকর্মী, তৈরি হবে হাতির করিডর, মেদিনীপুরে জানালেন বনমন্ত্রী

author-image
Harmeet
New Update
জঙ্গলের গভীরে নজরদারিতে মোটরবাইক বনকর্মী, তৈরি হবে হাতির করিডর, মেদিনীপুরে জানালেন বনমন্ত্রী

দিগ্বিজয় মাহালী, পশ্চিম মেদিনীপুর : হাতির হামলাতে জেরবার পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলির জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতে চলেছে বন দফতর। সোমবার মেদিনীপুর শহরে যৌথ বন পরিচালন বিষয়ক সভায় এমনই জানালেন বনমন্ত্রী। মেদিনীপুর বনবিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এই সভাতে হাজির ছিলেন জঙ্গলমহলের ৫ জেলার বিভিন্ন স্তরের বনকর্মী ও বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যরা। উপস্থিত ছিলেন, রাজ্যস্তরের বিভিন্ন বনাধিকারিকদের পাশাপাশি বনমন্ত্রী জোতিপ্রিয় মল্লিক, ছিলেন বনপ্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, জেলা শাসক আয়েশা রানি, পুলিশ সুপার দিনেশ কুমার সহ বিভিন্ন বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, অন্যান্য আধিকারিকরা।



 বনকর্মীরা জঙ্গল সৃজনে আরও উৎসাহিত হলে তাদের ভবিষ্যতে বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মন্ত্রী জোতিপ্রিয় মল্লিক। তবে সব থেকে এই মুহুর্তে জঙ্গলমহলের বড় সমস্যাগুলির ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান। তিনি বলেন, "হাতির হামলায় জেলাগুলিতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে জানি। তাই এবার এই সমস্ত জেলাগুলিতে হাতির একটি করিডর তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷ যার মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ শুরু হয়েছে৷ এর দ্বারা হাতি একদিকে প্রবেশ করবে, অন্যদিক দিয়ে বেরিয়ে যাবে৷ সেই সাথে হাতির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণে তৎপরতা বাড়ছে।" সুন্দরবন প্রসঙ্গে বলেন, "সুন্দরবনে গ্রামগুলিতে প্রায়ই বাঘ ঢুকে পড়ে। তাই সেখানে বিশেষ একধরনের ফেন্সিং হবে। ফ্লেক্সিবল অ্যালুমিনিয়াম নেট তৈরি করে লাগানো হচ্ছে। ওই এলাকাগুলি ঝড়েও ক্ষতি হয়। তাই সেখানে ম্যানগ্রোভ লাগানো হয়েছে ব্যাপক পরিমাণে। উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরে যেখানে এই ঝড়ের প্রভাব বেশি হয় সেখানে এই গাছ লাগানো হয়েছে। ১৫ কোটি ৫৪ লক্ষ ম্যানগ্রোভ লাগিয়েছি আমরা সেই সাথে রাজ্যের প্রতি জেলাতে একটি করে হরিণালয় তৈরি হচ্ছে৷ পূর্ব মেদিনীপুরে একটি জায়গা চিহ্নিত করেছি , দীঘাতে একটি চিড়িয়াখানা করছি। তার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে।"







গাছ কাটা নিয়ে জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারকে বিশেষ নজরদারির জন্য জানান তিনি। গড়বেতায় চার হাজার গাছ কেটে নেওয়া প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "পুলিশ প্রশাসন ও বন দফতরকে অনুরোধ করবো গড়বেতার মতো ঘটনা যাতে না ঘটে। সতর্ক থাকতে হবে। ওই এলাকাগুলিতে আরও নিয়ন্ত্রন দরকার আপনাদের।" একে বনকর্মী কম তার উপর বীট ও রেঞ্জ অফিসগুলিতে গাড়ির অভাব। এর আগে বনকর্মীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিটি বীট অফিসে গাড়ির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছিল। সেইমতো বনকর্মীরা যাতে সর্বত্র পৌঁছে কাজ করতে পারে তার জন্য সমস্ত বীট ও রেঞ্জারদের জন্য মোটরবাইকের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান বনমন্ত্রী। জেলা ও বনদফতরের জন্য টোল ফ্রি নম্বরও চালু করা হচ্ছে। এছাড়াও বেশ কিছু মোবাইল নম্বর চালু করা হবে, তাতে অভিযোগ জানাতে পারবেন সবাই৷ বন সহায়ক নিয়োগ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বন সুরক্ষা কমিটির এক সদস্য মন্ত্রীকে বলেন, "বন দফতরে কর্মী নিয়োগের সময় জঙ্গল এলাকার যুবকদের না নিয়ে বাইরের ছেলেদের নিয়োগ করা হয়েছে। যারা জঙ্গল সম্পর্কে কিছু জানে না। তারা শুধু অফিসে বসে থাকে।" অন্যদিকে অরণ্য সপ্তাহে এবছর উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে বন দফতর ১ কোটি গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তার সাথে আরও ১ কোটি চারা গাছ বিলি করা হবে বলে জানান বনমন্ত্রী।