দিগ্বিজয় মাহালী, পশ্চিম মেদিনীপুর : ঘাটালে নৌকো মালিকদের হুঁশিয়ারিতে অস্বস্তিতে ব্লক প্রশাসন। বন্যা দোরগড়ায়, গতবারের নৌকো ভাড়ার টাকা না মেলার অভিযোগ তুলে সরব নৌকো মালিকরা। তাদের হুমকি, চলতি বছরে বন্যায় নৌকো দেবে না, আর এতে অস্বস্তিতে ঘাটাল ব্লক প্রশাসন।
উল্লেখ্য, বন্যা আসলে প্রতিবছর ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। জলের তলায় ডুবে থাকে একাধিক ব্লক, বিশেষ করে ঘাটাল ব্লকের ১২ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা, ঘাটাল পৌর এলাকা, এমনকি রাজ্য সড়কে জলের তলায় ডুবে যায়, সেই সময় ঘাটাল মানুষের যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন হয়ে ওঠে নৌকো। তাই সরকারিভাবে বন্যা কবলিত মানুষকে নৌকো পরিষেবা দেওয়ার জন্য গ্রাম পঞ্চায়েত, পৌরসভা, পূর্ত দফতর এমনকি পুলিশ প্রশাসন নৌকো ভাড়া নেয় বন্যা কবলিত গ্রামবাসীর জন্য। সেই সময় শুধু গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিকে নৌকো ভাড়া গুনতে হয় ২৫-৩০ লক্ষ টাকা। বছর ঘুরে আবার বর্ষা আসলেও সঠিকভাবে টাকা না মেলায় তাই নৌকো মালিকদের হুঁশিয়ারি, তারা নৌকো দেবে না এই বৎসর বন্যায়। ঘাটাল ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, ঘাটাল ব্লকের ১২ টির মধ্যে ৯ টি অঞ্চলের এলাকার মানুষকে পরিষেবা দেয়ার জন্য ৫০ থেকে ৫২ টি নৌকো ভাড়া নেওয়া হয় গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে। সেই নৌকো ভাড়ার ক্ষেত্রে অর্থ বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর বহন করে। একটি নৌকা ভাড়া ১৬০০ টাকা প্রতিদিন। সেই নৌকো ভাড়া সঠিকভাবে না মেলায় নৌকো মালিকদের হুঁশিয়ারি, এই বৎসর তারা নৌকো দেবে না। ঘাটাল ব্লক এর নৌকা মালিকদের অভিযোগ, ভাড়ার টাকা বছর গড়াতে গেলেও এখনো সম্পূর্ণ মেলেনি, তাই তারা ঠিক করেছে তারা আর নৌকো ভাড়া দেবে না।
শুধু তাই নয়, তাদের অভিযোগ, প্রতিনিয়ত বাড়ছে পেট্রোল-ডিজেলের দাম, তাই নৌকো ভাড়া বাড়াতে হবে। নৌকো ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে একাধিক দফতরের একাধিক ভাড়া। বন্যার সময় পূর্তদফতর যে নৌকা ভাড়া নেয় তারা প্রতিদিন ভাড়া দেয় ২৬০০ টাকা। আর পঞ্চায়েতের নৌকোর ক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত ১৬০০ টাকা ভাড়া দেয়। একটি নৌকো মেরামত করতে প্রতি বৎসর খরচা হয় প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা। ক্যামেরার সামনে কেউ না বললেও ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, পূর্ত দফতর ও পৌরসভার তরফ থেকে যে নৌকাগুলি ভাড়া নেওয়া হয় বন্যার সময়, তাদের প্রতিদিনের ভাড়া ও মজুরি হিসেবে দেওয়া হয় ২৬০০টাকা সেই তুলনায় গ্রাম পঞ্চায়েতে একে বারেই কম। যদিও এ বিষয়ে ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ মাঝি বলেন, "বন্যার সময় নৌকা নেওয়ার ক্ষেত্রে নৌকো মালিকরা না যদি টাকা পায় বিষয়টি দেখা হবে। নৌকো মালিকরা নৌকো না দিলে সমস্যার মুখে পড়তে হবে বন্যা কবলিত ঘাটাল মানুষজনকে, তাই আমরা দ্রুত দেখব কেউ যদি টাকা না পায় তাদের দ্রুত টাকা দেওয়ার।'' অপরদিকে তিনি স্বীকার করেন যে টাকা গ্রাম পঞ্চায়েত ভাড়া বাবদ বহন করে সেটা একেবারেই নগণ্য। একটা নৌকোর ক্ষেত্রে ভাড়া আরো বেশি হওয়া প্রয়োজন ।এই বিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসক আয়েশা রানীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন যে সমস্ত মালিকরা টাকা পায়নি মহকুমাশাসক ও বিডিও দের বলব বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য।