২৭ টি পরিবারকে বয়কট করে রাখার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে

author-image
Harmeet
New Update
২৭ টি পরিবারকে বয়কট করে রাখার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে

দিগ্বিজয় মাহালী, পশ্চিম মেদিনীপুর : পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় ব্লকের মকরামপুর অঞ্চল। আর মকরামপুর অঞ্চলের অন্তর্গত তালাচক ও ফুলগেড়িয়া এই দুটি গ্রামের প্রায় ২৫ থেকে ২৭ টি বাড়ি বয়কটের শিকার, কাঠগড়ায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তালাচক গ্রামের ২৭ টি পরিবার নিয়ে একটি আদিবাসী পাড়া। আর সেই আদিবাসী পাড়ার সাতাশটি পরিবারকেই বয়কট করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন দিক থেকে, অভিযোগ ওই গ্রামের বাসিন্দাদের। দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর অভিযোগ, তারা স্থানীয় তৃণমূল নেতা, তথা অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মী সিটের গোষ্ঠীর লোক নয়। আর সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত প্রায় দেড় থেকে দুই বছর ধরেই চলছে বয়কট।



 গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত প্রায় দেড় থেকে দুবছর ধরেই ওই গ্রামের কোন মানুষ কোন সরকারি সাহায্য পাননি। সমস্ত রকম সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে তাদের । এমনকি একটা এস টি সার্টিফিকেট নিতে গেলেও ফিরিয়ে দেওয়া হয় ওই গ্রামের বাসিন্দাদের। এমনকি দেওয়া হয় না পর্যাপ্ত পানীয় জল অথচ গ্রামেই রয়েছে সাবমার্শাল সরকারিভাবে পানীয় জলের ব্যবস্থা কিন্তু তা ওই নামের মানুষের জন্য চালানো হয় না। আদিবাসী ওইসব মানুষজন সমস্ত জায়গায় জানানোর পরও টনক নড়েনি কারও, শেষ পর্যন্ত তারা মিডিয়ার দ্বারস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকার মানুষ । তালাচকের ঠিক পাশের এলাকা ফুলগেড়িয়া সেখানে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ টি বাড়িকে বয়কট করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এমনকি এইচএস পাস পরীক্ষার্থীকে কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে অভিযোগ এক ছাত্রীর। স্কলারশিপের টাকার জন্য ফর্মে পঞ্চায়েতের যে সই লাগে সেই সই টুকুও করে দেওয়া হচ্ছেনা পঞ্চায়েত এর পক্ষ থেকে। সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা নিতে গেলে এই পঞ্চায়েত থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, বলে দেওয়া হয় স্থানীয় তৃণমূল নেতা অর্থাৎ স্থানীয় বুথ সভাপতির লিখিত অনুমতি লাগবে, স্থানীয় বুথ সভাপতি পরিষ্কার জানিয়ে দেন অঞ্চল সভাপতির নির্দেশ আছে তাই ওই সমস্ত পরিবার কোন সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন না,এরকমই বক্তব্য ওই বয়কট থাকা পরিবারের সদস্য সদস্যাদের। আর এই খবর করতে গ্রামে ঢুকলেই খবর পৌঁছে যায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। খবর পেয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ব্লক নেতৃত্বকে সাথে নিয়ে এলাকায় চলে আসেন। আর তারপরই ব্লক সভাপতি ও নারায়ণগড় পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে একরকম বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাদের। ব্লক সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় বয়কট করা পরিবারের সদস্যরা । ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ জানান, 'তারা গ্রামে এসেছেন সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলতে, বয়কটের যে অভিযোগ তা কতটা সত্য তা জানার জন্য, তৃণমূল সরকার এ ধরনের কোন বয়কটকে সমর্থন করে না।' পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি গণেশ মাইতির অভিযোগ, এ ধরনের কোনো ঘটনা নেই ওই গ্রামে। আর সরকারি তথ্য দেখিয়ে তিনি বলেন এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা । আর যার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ, তৃণমূলের সেই অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মী সিট এর বক্তব্য, মিথ্যা অভিযোগ করছেন ওই সমস্ত মানুষজন। আর এর মধ্যেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। বারে বারে পুলিশ টহল দিচ্ছে গ্রামে, যাতে কোথাও কোন ধরনের ঘটনা না ঘটে। ওই সমস্ত পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলছে, তাদের কি অসুবিধা, তা মেটানোর চেষ্টা করছে স্থানীয় প্রশাসন।