দিগ্বিজয় মাহালী, পশ্চিম মেদিনীপুর : মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায়। কোথাও ভুয়ো নথি দেখিয়ে, আবার কোথাও বিনা নথিতেই প্রশাসনের নাকের ডগায় রমরমিয়ে চলছে বেআইনি ভাবে মাটি কেটে তা অন্যত্র পাচার করা। এমনকি নাম্বার প্লেটহীন মাটি বোঝাই ট্রাক্টরের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ শহরবাসী। সব মিলিয়ে এনিয়ে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজাও।এমনই মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যের শুধু চন্দ্রকোনা শহরই নই চন্দ্রকোনার শহর ছাড়িয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও এর দাপট বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধীদের।
জানা যায়, সম্প্রতি চন্দ্রকোনা পৌরসভার ১১ নং ওয়ার্ড লালসাগরে একটি জলাশয় ভরাটের অভিযোগ ওঠে। সেই খবর পেয়ে ভরাট বন্ধ করে দেয় চন্দ্রকোনা পৌরসভা। অভিযোগ, ওই জলাশয় ভরাটের জন্য বাইরে থেকে মাটি আনা হচ্ছিল যার সরকারি কোনও নথি ছিল না। এমনকি পৌরসভার তরফে জানানো হয়, ওই জলাশয় ভরাটে পৌরসভার কোনও NOC ছাড়াই চলছিল মাটি ফেলে জলাশয় ভরাটের কাজ। প্রয়োজনীয় নথি চেয়ে জায়গার মালিককে তলব করেছে চন্দ্রকোনা পৌরসভা। জলাশয় ভরাটের সাথে চন্দ্রকোনায় বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারি খাস জায়গায় রয়্যালটি না কেটে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে জেসিবি মেশিন দিয়ে মাটি কেটে তা নাম্বার প্লেটহীন একাধিক ট্রাক্টরে বোঝায় করে চন্দ্রকোনার বিভিন্ন জায়গায় পাচার ও বিক্রি চলছে। এক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি না নেওয়ায় ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এতে পকেট ভরছে একশ্রেণীর অসাধু মাটি মাফিয়াদের। স্থানীয়দের দাবি সবাই সবকিছু জানে কিন্তু তারা নিশ্চুপ,মাটি মাফিয়াদের সাথে প্রশাসন বা শাসকদলের ঘনিষ্ঠতা না থাকলে এসব সম্ভব নয়। এবিষয়ে চন্দ্রকোনা ২ নং ব্লকের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফরের আধিকারিক সৌমিত্র মুখার্জির কাছে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, 'মাটি কাটা বা মাটি গাড়ির অনুমতি সাধারণত এসডিএলআরও অর্থাৎ মহকুমা ভূমি রাজস্ব দফতর থেকে দেওয়া হয়। কারা অনুমতি পাচ্ছে ব্লকে আমরা জানতে পারি। কিন্তু অনুমতির বাইরে কোথাও কোনও অভিযোগ আসলে তা দ্রুত বন্ধ করে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এই ধরনের কোনও অভিযোগ আসলে অবশ্যই আগামী দিনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এবিষয়ে চন্দ্রকোনা পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রতিমা পাত্র জানান, 'পৌর এলাকায় জলাশয় বা পুকুর ভরাট নিয়ে কোনও খবর আসলে তা দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।সম্প্রতি এমন কিছু অভিযোগ পেয়ে পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।এবিষয়ে পৌরসভা কড়া মনোভাব নিয়ে চলছে।' আর মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে নিয়ে চন্দ্রকোনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও,বিরোধী বিজেপি এবং সিপিএম একযোগে নিশানা করেছে শাসক তৃণমূলকে।যদিও ঘটনার কথা স্বীকার করে চন্দ্রকোনা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ সাঁতরা জানান মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে যে বেড়েছে তা অস্বীকার করার নয়।