বনমালী ষন্নিগ্রহী,বাঁকুড়াঃ দীর্ঘ দু'বছর দুই পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় জীবন কাটছে খাতড়ার ধারগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা বছর তিরিশের মিঠুন দুলের। মিঠুনের বাবা জানকী দুলে, মা ভারতী দুলে। এলাকার ভালো এবং পরোপকারী ছেলে ছিল মিঠুন। কিন্তু বাবা মায়ের অভাবের সংসারে ছেদ টানতে হয় পড়াশুনায়। সংসারের হাল ফেরাতে, জীবন জীবিকার স্বার্থে মিঠুন পাড়ি দিয়েছিল দিল্লীতে। সেখানে এক ঠিকাদারী সংস্থায় কাজও জুটিয়ে নেয় সে। কিন্তু তারপর যেন সব ওলট পালট হয়ে যায়। দিল্লীতে জ্বরের প্রকোপে পড়ে মিঠুন। বৃদ্ধ বাবা, মা ধার দেনা করে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন ছেলেকে। অভাবের সংসারে চিকিৎসা শুরু করেন 'অসুস্থ' ছেলের, কিন্তু অর্থাভাবে এখন তাও বন্ধ। বাধ্য হয়েই চরম বাস্তবকে মেনে নিয়েছে পরিবার। তাই 'অসুস্থ' এই ছেলেকে বাড়িতে লোহার শিকল পরিয়ে কাজে যান বৃদ্ধ বাবা মা। মিঠুন দুলের বৃদ্ধ বাবা জানকী দুলে, মা ভারতী দুলের কথায়, 'অন্যের সামান্য জমি ভাগে চাষ করে চলে সংসার। নিজেরা দুজন আর অসুস্থ ছেলের দুবেলা খাবার জোটাতেই যেখানে হিমসিম খেতে হয়, সেখানে চিকিৎসার কথা বিলাসিতা।'
অন্যদিকে গ্রামবাসী অজিত কুমার দুলে বলেন, "ওই পরিবারটি অত্যন্ত গরীব। বাবা, মায়েরও যথেষ্ট বয়স হয়েছে। চাইলেও ছেলের চিকিৎসা করাতে পারে না। এই অবস্থায় মিঠুনের প্রয়োজনীয় চিকিৎসায় প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করার আবেদন জানান তিনি।" এ বিষয়ে খাতড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনন্দমোহন মাহাত জানান, আপনাদের কাছেই প্রথম শুনলাম। প্রশাসনের তরফে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন আনন্দবাবু।