হাবিবুর রহমান, ঢাকাঃ বাংলাদেশে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে শনিবার রাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুনে ঝলসে প্রাণ গেছে ৩৭ জনের। নিহতদের মধ্যে ৫ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মীও রয়েছে। এছাড়াও ৪ শতাধিক মানুষ দগ্ধ ও আহত হয়েছেন। রোববার সকালে রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে নিহত ৩৭ জনের তালিকা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করা হয়েছে। বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় দলীয় নেতাকর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। জানা গেছে, বাংলাদেশের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোয় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শনিবার রাতে ব্যাপক আতঙ্ক পড়ে। রাতভর আগুন আর পরপর বিস্ফোরণের জেরে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে একে একে ৩৭ জনের। এদের মধ্যে রয়েছেন ৫ দমকল কর্মীও। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। আহত ৪ শতাধিকের বেশি মানুষ। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে আহতদের। শনিবার রাত থেকে রবিবার দুপুর অবধি কন্টেনারের ডিপোয় আগুন জ্বলছে। ভিতর থেকে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের শব্দ। আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছে দমকল কর্মীরা। ঢাকা থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরের সীতাকুণ্ডে দমকলকর্দের নেওয়া হয়েছে। তারা প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে দিন-রাত কাজ করে চলেছেন।
মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন। ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে সংলগ্ন সীতাকুণ্ডের শীতলপুর এলাকায় একটি বড়সড় কন্টেনার ডিপো অবস্থিত। আমদানি-রপ্তানি করা বিভিন্ন পণ্য এই ডিপোতে রাখা হয়। শনিবার রাত প্রায় ১১ টা নাগাদ এই ডিপোয় আচমকাই আগুন লেগে যায়। সেসময় কাজ করছিলেন অনেকেই। ডিপোর ভিতরে মজুত থাকা দাহ্য পদার্থের জন্য দ্রুত আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ঘটতে থাকে বিস্ফোরণ। এই দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে তিন-চার কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে পরপর বিস্ফোরণে। আশপাশের বাড়ি-ঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে। রাসায়নিকের কন্টেইনারে একের পর এক বিকট বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে বহু দূর পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। চারপাশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। অগ্নিদগ্ধদের জরুরি চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যালের সব চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আগুন নেভাতে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা থেকেও দমকলের বিভিন্ন ইউনিট যোগ দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৪টি ইউনিট কাজ করছে। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে দমকল কর্মীরা ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করেন। এমন ভয়াবহ ঘটনার গুরুত্ব বুঝে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন পুলিশ ও দমকল বিভাগের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।