হরি ঘোষ, পাণ্ডবেশ্বরঃ 'পট' শব্দের অর্থ চিত্র। বাংলার পটচিত্র পট বা বস্ত্রের উপর আঁকা একপ্রকার লোকচিত্র। এটি প্রাচীন বাংলার (বাংলা ভাষাভাষী অধ্যুষিত অঞ্চল) অন্যতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। প্রাচীনকালে যখন কোন রীতিসিদ্ধ শিল্পকলার অস্তিত্ব ছিলনা তখন এই পটশিল্পই বাংলার শিল্পকলার ঐতিহ্যের বাহক ছিল। যারা পটচিত্র অঙ্কন করেন তাদেরকে সেযুগে এবং এযুগেও পটুয়া বলা হয়। লোকশিল্পের অন্যতম প্রাচীন মাধ্যম পটশিল্প। বাংলাদেশেও পটশিল্পের ইতিহাস প্রাচীন। পটুয়াদের আঁকা ছবি ও সেখানে উল্লিখিত কাহিনি ধর্মপ্রচারে একান্ত সহায়ক হয়েছিল। মঙ্গলকাব্যের পট এ প্রসঙ্গে উল্লেখযাগ্যো। মুসলিম শাসকরাও ইসলাম ধর্মপ্রচারের জন্য পটুয়াদের সাহায্য নিতেন। পটচিত্রের সাহায্যেই তুলে ধরা হত চৈতন্যদেবের বাণী। মুকুন্দরামের চণ্ডীমঙ্গলে পটের উল্লেখ আছে। পুরাণ এবং লাকোকথাকে আশ্রয় করে একটি বড়ো ক্যানভাসকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে গল্প বলতেন পটশিল্পীরা—ছবির মাধ্যমেই এই গল্প বলা হত।
বহু বছর পর খনি অঞ্চল পাণ্ডবেশ্বর দেখা মিলল পট শিল্পীর । প্রায় কয়েক দশক খনি অঞ্চলে দেখা যায়নি পট শিল্পীদের এমনটাই এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ এর মত। হঠাৎ বুধবার পাণ্ডবেশ্বর এর কুমারডিহি গ্রামে পটশিল্পের আগমনে বেশ ভিড় দেখা যায় উৎসাহী মানুষদের। জামির চিত্রকার নামে পটুয়া জানান তিনি বীরভূমের সিউড়ি থানার ইটাগড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘ 25 বছর ধরে তিনি এই পটুয়ার কাজ করে আসছেন বংশপরম্পরায় । এর আগে তার বাপ ঠাকুরদা রা এই কাজ করতেন বলে জানান তিনি। করোনা অতিমারির সময় দীর্ঘ লকডাউনে বাড়িতে বসেই কেটেছে দিন। তবে মাসিক 1000 টাকা করে সরকারি ভাতা পান । এছাড়াও পটুয়ার কাজ করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে দিনে 200 থেকে 250 টাকার বেশি হয় না, কিন্তু তাতেও আনন্দে চলে যায় দিন।