নিজস্ব সংবাদদাতাঃ সূর্য সেন সশস্ত্র বিদ্রোহের শক্তিতে বিশ্বাসী ছিলেন। ১৯৩০ সালে তিনি যে চট্টগ্রাম অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তার লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের 'সশস্ত্র শক্তিকে' চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব তা প্রদর্শন করা। সূর্য সেন ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ চট্টগ্রামের নোয়াপাড়ায় রমণীরঞ্জন সেন ও শিলা বালা দেবীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১৬ সালে, সেন তাঁর শিক্ষক শতীশচন্দ্র চক্রবর্তীর মাধ্যমে বিপ্লবী ধারণাগুলি আত্মস্থ করেছিলেন, যখন তিনি মুর্শিদাবাদের বহরমপুর কলেজে (বর্তমানে কৃষ্ণথ কলেজ) বিএ করছিলেন।
মাস্টার দা ১৯১৮ সালে চট্টগ্রামে এলে তিনি স্থানীয় ন্যাশনাল স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন এবং সম্মানজনক 'মাস্টারদা' দিয়ে বিখ্যাত হন। পরে তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি হন। সেন অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি আন্দোলনকে উৎসাহিত করার জন্য নগদ অর্থের জন্য আসাম-বেঙ্গল রেলওয়ের কোষাগার লুণ্ঠন করেছিলেন, যার জন্য তিনি সহকর্মী বিপ্লবী অম্বিকা চক্রবর্তীর সাথে দুই বছরের জন্য কারারুদ্ধ ছিলেন। উভয়ই ১৯২৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় এবং তাদের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করে। এদিকে ইংরেজ প্রশাসন সূর্য সেনকে জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় ধরার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রাখে।
সূর্য সেন গৈরলা গ্রামে ক্ষীরোদপ্রভা বিশ্বাসের বাড়িতে আত্মগোপন করে ছিলেন। ১৯৩৩ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি রাতে সেখানে এক বৈঠকে ছিলেন কল্পনা দত্ত, শান্তি চক্রবর্তী, মণি দত্ত, ব্রজেন সেন আর সুশীল দাসগুপ্ত। ব্রজেন সেনের সহোদর নেত্র সেন সূর্য সেনের উপস্থিতির খবর পুলিশকে জানিয়ে দেয়। রাত প্রায় ১০টার দিকে পুলিশ আর সেনাবাহিনী ক্ষীরোদপ্রভা বিশ্বাসের বাড়িটি ঘিরে ফেলে। কনডেম্ড সেলে সূর্য সেনকে কড়া পাহারায় নির্জন কুঠুরীতে রাখা হত। ট্রাইব্যুনাল সূর্য সেনকে ১২১ ধারা অনুসারে দোষী সাব্যস্ত করিয়া প্রাণদন্ডে দণ্ডিত করে।