নিজস্ব সংবাদদাতাঃ প্লাস্টিক বর্তমানে আমাদের পৃথিবীকে দূষিত করে রেখেছে। পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র এই প্লাস্টিকের ফলে দূষণের পাশাপাশি অনেক জীবজন্তুর প্রাণহানিও ঘটে চলেছে। যা আমাদের বাস্তুতন্ত্রের পক্ষে মোটেই সুফলদায়ক নয়। প্রতি বছর ৩৮০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উত্পাদিত হয়। উত্পাদিত সমস্ত প্লাস্টিকের শুধুমাত্র একটি ব্যবহারের পরে তা ফেলে দেওয়া হয়। যেহেতু সমস্ত প্লাস্টিকের মাত্র ৯% পুনর্ব্যবহৃত হয়, এর বেশিরভাগই আমাদের সম্প্রদায়ের আবর্জনা ফেলে, আমাদের ল্যান্ডফিলগুলিকে ভরাট করে এবং আমাদের মহাসাগরকে দূষিত করে।
আমাদের পৃথিবীর ৩ ভাগ জল আর ১ ভাগ স্থলভাগের পরিমাণ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। ধরনী সবুজ থেকে ধূসর রং-এ পরিণত হচ্ছে। আমাদের এই সুশ্যামল পৃথিবীকে পুনরায় সবুজ কর তুলতে প্লাস্টিক বর্জন করতে হবে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, সমুদ্রের তলদেশ, স্থলভাগ এমনকি মহাকাশভাগও আজ এই প্লাস্টিকের দূষণে জর্জরিত। সমুদ্রের তলায় বসবাসকারী মাছ এবং অন্যান্য প্রাণীকুলের এই প্লাস্টিক জমার ফলে তাদের মৃত্যুর পথে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের খাবারের সাথে তা মিশে গিয়ে শ্বাসনালীতে আটকে যাচ্ছে। স্থলভাগেও বিভিন্ন গবাদি পশুর খাদ্য গ্রহণের সময় তা খাবারের সাথে মিশে গিয়ে শ্বাসনালীতে আটকে প্রাণীদের জীবনহানি ঘটায়।
জাপানের এক বিজ্ঞানী এক সাক্ষাৎকারে জনিয়েছিলেন, '' আমরা একবার একটা সমুদ্রের পাশে গবেষণা করতে গিয়ে এক বিশালাকার মৃত তিমি মাছ সমুদ্রের পাড়ে দেখতে পাই। হঠাৎ এত বিশাল তিমিকে মৃত অবস্থায় পেয়ে আমাদের গবেষকদের দলটি মাছটিকে পরীক্ষা কতরে দেখে। তাতে আমরা জানতে পারি যে, তিমি মাছটি ক্ষুধার্ত অবস্থায় খাবার মনে করে ২০ টন প্লাস্টিক খেয়ে ফেলেছে, যার ফলে তার পেটে খাবারের পরিবর্তে প্লাস্টিক জমা হয়েছে। দীর্ঘদিন এমন চলার ফলে অসুস্থ হয়ে তিমি মাছটি মারা গেছে।'' সুতরাং, আমাদেরকেই আমাদের এই পৃথিবীকে, পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে হবে। তাই মানুষের প্রতি সচেতনতা বাড়াতে ২৫ মে দিনটিকে ''আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক মুক্ত দিবস'' হিসেবে পালন করা হয়।