নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রামঃ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জঙ্গলমহলে মাওবাদী আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে পুলিশকে সোশ্যাল মিডিয়ায় নজর রাখার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েক মাস ধরে জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার উদ্ধার হয়। মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার উদ্ধারের ঘটনায় জঙ্গলমহল জুড়ে মাওবাদী আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। যার প্রমাণ পাওয়া যায় মাওবাদীদের ডাকা বনধগুলো সফল হতে দেখে। লাল কালিতে মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টারগুলোতে লেখা থাকত তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতি ও প্রাক্তন মাওবাদীদের চাকরির দাবী। মাওবাদী আতঙ্ক জোরালো হওয়ায় কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলনে ঝাড়গ্রাম আসার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক সেইমত বুধবার ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঝাড়গ্রাম টুরিস্ট কমপ্লেক্সে রাত্রি যাপন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামীকাল ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে সভা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে বেলপাহাড়ি থানার ওসির থেকে জানতে চাওয়া হয় বেলপাহাড়ির বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে। ওসি জানান, "বেলপাহাড়িতে ছয়টি সিআরপিএফ ক্যাম্প রয়েছে ও একটি রাজ্য পুলিশের স্ট্রাক বাহিনীর ক্যাম্প রয়েছে। বেলপাহাড়ির সঙ্গে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ৩০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার বর্ডার এলাকা রয়েছে। পাঁচটি রাস্তা রয়েছে যেগুলো দিয়ে ঝাড়খণ্ড যাতায়াত করা হয় সেই পাঁচটি রাস্তাতে নাকা চেকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবং বেলপাহাড়ি থানার পক্ষ থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এছাড়াও সিআরপিএফ এর পক্ষ থেকে প্রায় বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করা হয়। বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোতে পুলিশের পক্ষ থেকে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম করা হচ্ছে।" মুখ্যমন্ত্রী বেলপাহাড়িতে মহিলা উনার্স টিম তৈরি করার কথা বলেন। এছাড়াও মাওবাদী গতিবিধি জঙ্গলমহলে বাড়ায় ১৫ দিনের হাই এলার্ট জারি করা হয়েছিল। হাই এলার্টে তৃণমূল নেতাদের সন্ধ্যের পর বাড়ির বাইরে বেরোনোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোন থানা থেকে গ্রামের মানুষদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে সন্ধ্যে ছ'টার পর কেউ গ্রামের বাইরে বেরোবেন না। এই প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার ও জেলাশাসক বলেন, ঝাড়গ্রামে এইরকম কোন ধরনের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ চুপচাপ আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কটাও সব সময় নজরে রাখবেন। সোশ্যাল মাধ্যমে অনেক ভালো মানুষ রয়েছে আবার কেউ কেউ রয়েছে যারা দাঙ্গা লাগায় এবং মাওবাদী আতঙ্ক ছড়ায়। নিজের হাতে একটি পোস্টার লিখলো আবার সেটির ছবি তুলে ওই ছবিটিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করল। এইভাবে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি চারিদিকে খবর নিয়ে দেখেছি এই সব কিছু নেই। এটা কেউ ক্যাম্পেন করেছে কন্টিনিউয়াসলি। এর মধ্যে কে বা কারা জড়িত আছে তার একটা তদন্ত হবে। এই প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার জানান, মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার এবং মাওবাদী ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ঝাড়গ্রামে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।